কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল করছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এবার এসব মিছিলে অংশগ্রহণের জন্য আর্থিক প্রণোদনা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিটি মিছিলে অংশ নিলে ৫ হাজার টাকা এবং ব্যানার বা ফেস্টুন ধরলে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের হঠাৎ মিছিলের ঘটনা বেড়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, গত ১০ মাসে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের প্রায় সাড়ে তিন হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা শহরের বিভিন্ন এলাকায় হঠাৎ মিছিল করে ককটেল বিস্ফোরণ, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও যানবাহনে হামলার মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, যারা এ ধরনের কর্মকাণ্ডে আশ্রয়, ইন্ধন বা অর্থ সহায়তা দিচ্ছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চলতি বছরের মে মাসে সংগঠনটির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপরও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দলটির নেতা-কর্মীদের ঝটিকা মিছিল করতে দেখা যাচ্ছে।
এসব মিছিলে দলীয় স্লোগান, পতাকা ও ব্যানার ব্যবহার করা হচ্ছে। মিছিল শেষ হওয়ার পরপরই অংশগ্রহণকারীরা দ্রুত সরে যাচ্ছেন বলে জানান স্থানীয়রা।
সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক ড. তৌহিদুল হক বলেন, যদি সত্যিই টাকার বিনিময়ে মানুষ এসব মিছিলে অংশ নেয়, তাহলে তা বড় ধরনের রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা ডেকে আনতে পারে। কেবল পুলিশি তৎপরতায় এই সমস্যা সমাধান হবে না।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের আগে জনমনে স্বস্তি আনতে নিষিদ্ধ দলগুলোর অর্থায়ন, সংগঠক ও মাঠপর্যায়ের তৎপরতার ওপর নজরদারি জোরদার করতে হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে কোনো ধরনের অস্থিতিশীলতা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি প্রশাসনের গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো জরুরি।
এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিছিলসংক্রান্ত প্রচারণা বা উসকানিমূলক বার্তা শনাক্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন তারা।