আন্তর্জাতিক

ভারতের সাথে কি চুক্তি করলো বাংলাদেশ

স্টাফ রিপোর্টারঃ

স্টাফ রিপোর্টারঃ

রবিবার, ২৩ জুন, ২০২৪
ভারতের সাথে কি চুক্তি করলো বাংলাদেশ
গত দেড় দশকে প্রধানমন্ত্রী যখনই ভারত সফরে গিয়েছেন তখনই আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে পানি বন্টন চুক্তি। এবারে ও একই উদ্দেশ্যে ভারত গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।
কিন্তু সেই উদ্দেশ্য বরাবরের মতো এবারো ব্যার্থ হয়েছে। কারন এই চুক্তিতে প্রধানমত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কলকতার মুখ্যমন্ত্রী মমতার কতটুকু আগ্রহ আছে তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রতিবেশী। ফলে নানা ক্ষেত্রেই জড়িয়ে আছে এই দুই দেশের স্বার্থ। তাই যেকোন দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পর শুরু হয় প্রাপ্তি ও প্রদানের হিসাব।
এবারের শেখ হাসিনার ভারত সফরের পর সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে রেল চুক্তি। এই চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে নিজেদের ট্রেন চালিয়ে  নিতে পারবে ভারত।

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী বিনয় মোহন জানিয়েছেন নতুন এই চুক্তির ফলে ভারতের ট্রেন বাংলাদেশের দশর্না দিয়ে প্রবেশ করে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি সীমান্ত দিয়ে ভারত প্রবেশ করবে। 
পরীক্ষা মুলক ভাবে এই ট্রেন আগামী মাসেই চালু হবে। যদি এই ট্রেন চালু হয় তাহলে ভারতের প্রায় ৩৬০০ কিলোমিটারের রুট কমে আসবে মাত্র ৪০০-৫০০ কিলোমিটারে। 
তবে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি এই ট্রানিজিটে বাংলাদেশকে ঠিক কি পরিমান অর্থ দেওয়া হবে। এছাড়া এই লাইন বাংলাদেশ ব্যবহার করতে পারবে কিনা তা এখনো জানা যায়নি।

গেল কয়েক বছর ধরে ভয়াবহ হয়ে উঠছে বাংলাদেশের বন্যা। আর এর সবচেয়ে বড় কারন তিস্তা নদী। দুই দেশেই চেষ্টা করা হয়েছে  তিস্তা নদীকে নিজের মত কয়ে নিয়ন্ত্রনের।
ফলে দুই দেশেই দাবি উঠেছে তিস্তা নদী সংরক্ষনের। এবারের সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে সেই আহবানে সাড়া দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকার।
তার নির্দেশনায় শীঘ্রই একটা কারিগরি দল ভারত থেকে বাংলাদেশে আসবে। যারা মূলত এনালাইসিস করবেন কিভাবে তিস্তা নদীর পাড়কে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করা যায়।
তিস্তা সংরক্ষন চুক্তি ছাড়া ও বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী পানি বন্টন চুক্তির ব্যপারে কথা বলেছেন। এই বিষয়ে নরেন্দ্র মোদি আশ্বাস  দিয়েছেন তিনি মমতাকে চুক্তিতে রাজি করাবেন।
তবে মমতার সাথে নরেন্দ্র মোদীর যে বৈরি সম্পর্ক বিদ্যমান তাতে তার এই উদ্যোগ কতটুকু সফল হবে প্রশ্নবিদ্ধ। সর্বশেষ নির্বাচনে আরো শক্তিশালী হয়েছে মমতার অবস্থান।
এছাড়া ভারত মহাসাগরীয় অঞ্ছলে ভারতের প্রতিবেশিদের নিয়ে নতুন ইনিশিয়েটিভ ইন্দো প্যাসিফিকে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ। এই উদ্যোগে যোগ দিবে আরো কিছু দেশ।
এছাড়া দুই দেশের মধ্যে সাক্ষর হয়েছে ডিজিটাল পার্টনারশিপ। এই চুক্তির অধীনে একে অপরের মধ্যে ডিজিটাল সারফেসে নিজেদের সম্পর্ক বাড়াতে কাজ করবে দুই দেশ।
বর্তমানে সর্বমোট পাচটি রুটে ভারত বাংলাদেশ ট্রেন চলাচল করছে। চলমান পদ্ধতিতে ভারত সীমান্তে আসার পর ট্রেনগুলো ইঞ্জিন পাল্টে বাংলাদেশের ইঞ্জিনে চলাচল করে।
বাংলাদেশি চালক সেই ট্রেন দেশের অভ্যন্তরে চালান। তবে নতুন যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তাতে বাংলাদেশের সংযোগ থাকবেনা। ভারতীয়রাই নিজেদের ট্রেন চালাবে।

প্রাথমিক প্রস্তাব অনুযায়ী ভারতের গেদে থেকে পন্যবাহী ট্রেন বাংলাদেশের দর্শনা এবং চিলাহাটি স্টেশন হয়ে হলদি বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে প্রস্তাবে পরিবর্তন এসেছে।
দেশটির নতুন প্রস্তাবে ট্রেনের রুট আরো কিছুটা বেড়েছে। আগের প্রস্তাব থেকে পথ কিছুটা বাড়িয়ে ট্রেনটি হলদিবাড়ী থেকে যাবে ভুটান সীমান্তবর্তী ডালগাঁও স্টেশন পর্যন্ত।
সেক্ষেত্রে ভারতের পরিকল্পনা আছে পরবর্তীতে এই পথ বাড়িয়ে নেওয়া হবে ভুটান পর্যন্ত। সেক্ষেত্রে একই রেলপথে ব্যবহার করে সংযুক্ত করা যাবে তিনটি ভিন্ন দেশকে।
যদি এই রেলপথে বাংলাদেশ নিজেদের অধিকার নিশ্চিত করতে পারে তাহলে সম্ভবনা বাড়বে বাংলাদেশের জন্যে।