ভারতের গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য কর্ণাটকের ক্ষমতা হারিয়েছে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপি। বুধবারের নির্বাচনে শুরু থেকেই ধারণা করা হচ্ছিলো এমন ভরাডুবির। গতকাল ফলাফল শুরুর পর থেকেই মিললো তার সত্যতা।
দক্ষিণ ভারতের গুরুত্বপূর্ণ এই রাজ্যে জয়লাভের মাধ্যমে আগামী নির্বাচনের জন্য আগাম বার্তা দিয়ে রাখলো ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস। গুরুত্বপূর্ণ কর্ণাটক রাজ্য হাতছাড়া হওয়াকে বিজেপির জন্য সতর্কতা হিসেবেই দেখছেন অনেকে।
কর্ণাটক বিধানসভায় মোট আসন ২২৪। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ১১৩ আসনে জয়। গতকাল ফলাফল ঘোষণা শুরুর মাত্র দুই ঘন্টার মধ্যেই কংগ্রেস সেই ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছে যায়।
সবশেষ প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, কর্ণাটক বিধানসভার ১৩৫ আসন নিজেদের করে নিয়েছে রাহুল গান্ধীর কংগ্রেস। গতবারের চেয়ে ৫৫ আসন বেশি পেয়েছে তারা। ক্ষমতাসীন বিজেপির কাছে রয়েছে ৬৬ আসন। ধর্মনিরেপেক্ষ জনতা দল পেয়েছে ১৯ আসন।
বিজেপির ধর্মভিত্তিক রাজনীতি পুরোপুরি ব্যর্থ ছিলো এবার। হালাল, হিজাব, আজান থেকে শুরু করে বিভিন্ন ইস্যুতেই বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলো দলটি।
যার শুরুটা হয়েছিলো হিজাব বিতর্ককে কেন্দ্র করে। কর্ণাটক সরকার আচমকাই সেখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে মুসলিম শিক্ষার্থীদের হিজাব পরিধানের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বসে।
ক্লাসরুমের মধ্যে কোনভাবেই হিজাব বা অন্যকোন ধর্মীয় চিহ্ন প্রকাশ করা যাবেনা বলে উল্লেখ করে সেখানকার সংখ্যালঘু, হজ এবং ওয়াকফ দপ্তর। এনিয়ে পুরো দেশেই বিতর্কের শুরু হয়। এমনকি সুপ্রিমকোর্ট পর্যন্ত আলোচনা গড়ায়।
এছাড়াও কর্ণাটকের বিধানসভায় গেল বছর পাশ করা হয় অ্যান্টি হালাল বিল। এই বিলের আওতায় রাজ্যে হালাল মাংস বিক্রি করা বন্ধ করে দেয়া হয়। মূলত নবরাত্রি এবং উগাদি উৎসব চলাকালে হালাল মাংসের বিক্রি বন্ধ করতে সরব হয় বিজেপির সমর্থকরা।
আর সহসাই সেই আইনও পাশ করা হয়। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই বিলের সমালোচনা করা হয়। তাদের ভাষ্যমতে এটি ছিলো একটি অ্যান্টি মুসলিম বিল।
এছাড়াও স্থানীয় পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়াকে নিষিদ্ধ করেছিলো বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা। যার কারণে ক্ষমতাসীন দলের উপর নেতিবাচক ধারণা আরও পোক্ত হয় সাধারণ জনগণের।
এছাড়াও প্রথম থেকেই কর্নাটক বিজেপিতে বড় নেতার অভাব সুস্পষ্ট ছিল। যা এই ধরাশায়ী অবস্থার অন্যতম কারণ বলেই মনে করা হচ্ছে। ইয়েদুরাপ্পাকে সরিয়ে বাসবরাজ বোম্বাইকে মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু, জনসংযোগে তিনি ব্যর্থ ছিলেন।
অন্যদিকে কংগ্রেস শিবিরে ডি কে শিবকুমার, সিদ্দারামাইয়ার মতো বড় মাপের নেতা দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লড়াইয়ে ছিলেন।