অস্কারজয়ী সংগীত পরিচালক এ আর রহমান ও তাঁর স্ত্রী সায়রা বানুর বিচ্ছেদের খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই গুঞ্জনের ঝড় বইছে। তিন দশকের সাজানো সংসারের ইতি টানার সিদ্ধান্ত কেন নিলেন রহমান, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন ভক্তরা। একই সময়ে রহমানের দীর্ঘদিনের সহকর্মী ও ব্যান্ডের বেজ গিটারিস্ট মোহিনী দে-ও তাঁর স্বামী মার্ক হার্টসাচের সঙ্গে বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন। দুটি খবরই প্রায় একসঙ্গে সামনে আসায় নেটিজেনদের মধ্যে জল্পনা শুরু হয়েছে—মোহিনীর সঙ্গে কি রহমানের বিশেষ কোনো সম্পর্ক রয়েছে?
১৯৯৫ সালে সায়রা বানুর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এ আর রহমান। এই দীর্ঘ দাম্পত্যে তাঁদের তিন সন্তান—খাদিজা, রহিমা এবং আমিন। তাঁদের সংসার ছিল শিল্প ও সৃজনশীলতার প্রতিচ্ছবি। তবে সম্পর্কের এই যাত্রা এবার থেমে গেল। আইনজীবীদের মাধ্যমে উভয় পক্ষ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত জানালেও, কেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো তা নিয়ে রয়েছে অস্পষ্টতা।
এ আর রহমানের ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মোহিনী দে তাঁর স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন। এতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় গুঞ্জন। কেউ কেউ ধারণা করছেন, মোহিনীর সঙ্গে রহমানের বন্ধুত্বই তাঁদের এই ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের নেপথ্যে ভূমিকা রেখেছে। এমনকি, নেটিজেনরা এই বিচ্ছেদের পেছনে "গোপন সম্পর্কের" গল্প সাজিয়ে ফেলেছেন।
এই গুঞ্জনের মধ্যেই রহমানের স্ত্রীর আইনজীবী বন্দনা শাহ বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, “এই বিচ্ছেদের সঙ্গে মোহিনীর কোনো যোগসূত্র নেই। সম্পর্কের এই ইতি এসেছে দীর্ঘদিনের তিক্ততার পর। উভয় পক্ষ সম্পর্কটি টিকিয়ে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন, কিন্তু তা আর সম্ভব হয়নি।”
বন্দনা শাহ আরও জানান, সায়রা বানু ভরণপোষণ বা খোরপোষ দাবি করছেন না। তিনি নিজের পায়ে দাঁড়ানো একজন স্বাধীন নারী। এ বিষয়ে কোনো ভুল তথ্য ছড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।
রহমান ও মোহিনীকে ঘিরে নানা মন্তব্য ও মিমে ভরে গেছে সোশ্যাল মিডিয়া। অনেকে বলছেন, "মোহিনীর বেজ গিটারে রহমানের মুগ্ধতাই বুঝি এই সিদ্ধান্তের কারণ!" আবার কেউ কেউ সিরিয়াস হয়ে লিখেছেন, “প্রায় ৩০ বছরের সম্পর্ক এভাবে ভেঙে গেল, দুঃখজনক।” তবে গুজব ছড়ানোর পেছনে যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব রয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আইনজীবীর বক্তব্য থেকে জানা গেছে, যদিও তাঁদের দাম্পত্য জীবন শেষ হয়েছে, তবে তাঁদের বন্ধুত্ব অটুট থাকবে। সন্তানদের প্রতি উভয়ের দায়বদ্ধতা তাঁরা সমানভাবে পালন করবেন।
গণমাধ্যমে উঠে আসা বিভিন্ন বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, এ আর রহমান ও সায়রা বানুর বিচ্ছেদের সঙ্গে মোহিনী দে বা অন্য কোনো তৃতীয় পক্ষের কোনো সম্পর্ক নেই। দীর্ঘদিনের তিক্ততা ও মানসিক দূরত্বই তাঁদের দাম্পত্য জীবনের ইতি টানার মূল কারণ।
এ আর রহমানের মতো কিংবদন্তি শিল্পীর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে এমন গুঞ্জন নতুন কিছু নয়। তবে এটাও ঠিক, ভক্তরা এমন খবরকে যতটা আলোচনার বিষয় বানান, ততটাই তা শিল্পীদের জন্য অস্বস্তির কারণ হয়। রহমান ও সায়রা তাঁদের নতুন জীবনে শান্তি ও সুখ পাবেন, এমনটাই প্রত্যাশা।