বাংলাদেশের শোবিজ অঙ্গন কখনোই গুঞ্জনের অভাবে থাকে না। তবে উপস্থাপক রাফসান সাবাব ও সংগীতশিল্পী জেফার রহমানের “ব্যাংকক অ্যাডভেঞ্চার” যেন সব গুঞ্জনকে ছাপিয়ে গেছে। ব্যাংককের বিখ্যাত সিয়াম প্যারাগন শপিং মলে তাঁদের একান্ত সময় কাটানোর ছবি ভাইরাল হওয়ার পর শোবিজ দুনিয়ায় চলছে তুমুল আলোচনা।
গত শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টার দিকে পেরি পেরি ফুড শপে তাঁদের একসঙ্গে দেখা যায়। তাঁদের সঙ্গী ছিল উচ্ছ্বাস, আর টেবিলে ছিল খাবার। রাফসান ছিলেন সবুজ শার্টে স্নিগ্ধ আর জেফার ওয়েস্টার্ন পোশাকে একেবারে গ্ল্যামারাস। তাঁদের এমন অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি তোলা প্রবাসী বাংলাদেশিদের হাত ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।
২০২০ সালে চিকিৎসক সানিয়া এশার সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পর থেকেই রাফসান সাবাব ও জেফার রহমানের ঘনিষ্ঠতার খবর চাউর হয়। তখনই তাঁদের সম্পর্কে নানা গুঞ্জন উঠেছিল। কেউ কেউ বলেছিলেন, জেফারের সঙ্গে বন্ধুত্বের ঘনিষ্ঠতাই নাকি সেই বিচ্ছেদের অন্যতম কারণ। যদিও সে সময় তাঁরা এই দাবিকে জোর গলায় অস্বীকার করেছিলেন।
কিন্তু গোপন সম্পর্কের গুঞ্জন কখনোই থামেনি। বরং তাঁদের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট, বিশেষ করে একে অপরের সঙ্গে সরাসরি না থেকেও মিলিয়ে-মিশিয়ে দেওয়া ছবি, সেই গুঞ্জনকে আরও জোরদার করে তুলেছে।
সিয়াম প্যারাগন শপিং মলে তাঁদের একসঙ্গে দেখা যাওয়ার ঘটনা নিয়ে শোবিজে চলছে নানা জল্পনা। ছবিতে দেখা গেছে, তাঁরা পাশাপাশি বসে হাস্যোজ্জ্বল মুখে খাবারের অর্ডার দিচ্ছেন। এমনকি, খাবার খাওয়ার সময়ও তাঁদের বেশ খোশমেজাজে দেখা গেছে।
তাঁরা এতটাই সাবধানী ছিলেন যে তাঁদের নিজ নিজ ফেসবুক প্রোফাইলে পৃথক ছবি পোস্ট করেছেন। পোস্টে ব্যাংককের প্রেক্ষাপট স্পষ্ট থাকলেও, কেউ কারো সঙ্গে আছেন—সেটা বোঝানোর কোনো চেষ্টা করেননি। তবে তাঁদের পরিকল্পনা নষ্ট করে দিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। তাঁদের তোলা ছবি গণমাধ্যমে পৌঁছে যাওয়ার পর এই সফরের গোপনীয়তা আর টিকল না।
ধারণা করা হচ্ছে, এই সফরে তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। তবে এ নিয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য প্রকাশ্যে আসেনি। শোবিজে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, ব্যাংকক সফর আসলে তাঁদের সম্পর্কের একটি বিশেষ অধ্যায়ের সূচনা। কেউ কেউ বলছেন, গোপনে হয়তো তাঁরা বিয়েও সেরে ফেলেছেন।
অনেকে মনে করেন, তাঁদের এই সম্পর্ক নিছক বন্ধুত্বের থেকে বেশি। শোবিজ অঙ্গনে তাঁদের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে বহু জল্পনা হলেও, কেউই এই সম্পর্কের বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি। ভক্তরা তাঁদের একসঙ্গে দেখে যেমন উচ্ছ্বসিত, তেমনি কেউ কেউ সমালোচনা করতেও ছাড়েননি।
জেফারের ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলতে গেলে বলা যায়, তিনি বাংলাদেশের প্রথম ইউটিউব-ভিত্তিক সংগীতশিল্পী। ২০১০ সালে ইংরেজি গানের কাভার দিয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করা জেফার বর্তমানে অভিনয়েও যুক্ত হয়েছেন। তাঁর হাস্যরসাত্মক ইউটিউব কন্টেন্ট এবং গান তরুণ প্রজন্মের কাছে বেশ জনপ্রিয়।
অন্যদিকে, রাফসান সাবাব তাঁর উপস্থাপনা দিয়ে শোবিজে নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন। যদিও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আলোচনা তাঁকে অনেক সময় অস্বস্তিতে ফেলেছে।
তাঁদের ব্যাংকক সফরের ছবি নিয়ে সামাজিক মাধ্যম সরগরম। কেউ মজা করে বলেছেন, “ব্যাংককের পেরি পেরি চিকেন এতই ভালো যে ওখানে গেলে মানুষ শুধু খেতে নয়, প্রেম করতেও শুরু করে।” অন্যদিকে, কেউ কেউ কড়া সমালোচনা করে বলেছেন, “এভাবে ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে গোপনীয়তা রাখার চেয়ে স্পষ্ট ঘোষণা দেওয়াই ভালো।”
রাফসান ও জেফারের সম্পর্ক নিয়ে জল্পনা নতুন কিছু নয়। তবে ব্যাংককে তাঁদের একান্ত সময় কাটানোর বিষয়টি এই গুঞ্জনের আগুনে ঘি ঢেলেছে। তাঁদের সম্পর্কের সত্যতা নিয়ে ভক্তদের অপেক্ষা বাড়লেও, তাঁরা যদি সত্যিই নিজেদের জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করে থাকেন, তবে সেটি খুশির খবরই হবে।
তবে শোবিজের এই রহস্যময় জুটি তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলবেন কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়। তাঁদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে এই আলোচনা কিছুদিন ধরেই শোবিজ পাড়ায় হট টপিক হয়ে থাকবে, সেটা নিশ্চিত!