কাউনিয়া উপজেলার সোনাতন দারুচ্ছুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আব্দুস ছাত্তারের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ,মাদ্রাসা মাঠের গাছ ও জমির মাটি বিক্রি,এনটিআরসিএ কর্তৃক সুপারিশ কৃত শিক্ষকের নিকট টাকা নিয়ে নিয়োগ প্রদান,কর্মচারী নিয়োগ বাণিজ্য সহ নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেছেন শিক্ষক সহ এলাকা বাসী।
সরেজমিনে গিয়ে শিক্ষক ও এলাকাবাসীর অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে সোনাতন দারুচ্ছুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আব্দুস ছাত্তার যোগদানের পর থেকে অধ্যাবধি পর্যন্ত নানা অনিয়ম ও দূর্নীতি করে আসছে। এলাকাবাসী ও অত্র মাদ্রাসার একাধিক শিক্ষকের লিখিত অভিযোগে জানাগেছে সুপার মাওলানা আব্দুস ছাত্তার আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতা কে সভাপতি নির্বাচিত করে ১জন দপ্তরী,১জন নিরাপত্তা কর্মী ও ১জন আয়া নিয়োগ করে ২৪ লক্ষ টাকা ঘুস গ্রহন করে পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ প্রদান করেন , এনটিআরসিএ কর্তৃক সুপারিশ কৃত ৬ জন শিক্ষকের নিকট থেকে ২০ হাজার থেকে শুরু করে ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুস নিয়ে নিয়োগ পত্র প্রদান, কমিটির সিন্ধান্ত ছাড়াই মাদ্রাসা মাঠের জমিতে গর্তখুঁড়ে কাকড়া গাড়ি যোগে মাটি বিক্রি,মাদ্রাসা মাঠের কয়েক টি মূল্যবান গাছ বিক্রির ৩৬ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন,পরীক্ষার ফি,রেজিষ্ট্রেশন ফি,ফরম ফিলাপ,সেশন ফি,দাখিল পাশের প্রশংসা পত্র,সনদপত্র বিতরণে অর্থ আদায়ে কোন প্রকার রশিদ প্রদান না করে আদায় কৃত অর্থ আত্মসাৎ করে চলেছেন। মাদ্রাসার জমির লীজের টাকা সহ অনান্য আয় মাদ্রাসার একাউন্টে জমা না করে আত্মসাৎ করছেন। শিক্ষার্থীদের টিউশন ফির টাকা অগ্রণী ব্যাংক রংপুর ক্যাডেট কলেজ শাখা থেকে উত্তোলন করে শিক্ষকদের মাঝে বন্ঠন না করে সমুদয় টাকা আত্মসাৎ করেছেন। মাদ্রাসার সহকারী সুপার মাওলানা মোঃ নুরুল ইসলাম বলেন সুপারের অনিয়ম ও দূর্নীতির কারণে ২০০৭ সালের ৯ অক্টোবর তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাকির হোসেন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে আমাকে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব অর্পন করেন । এছাড়াও সাবেক ইউএনও ধীরেন্দ্র নাথ সরকারের সিল ও স্বাক্ষর জাল করে ১৯ হাজার ৮২০ টাকা আত্মসাৎ করায় ২০১২ সালে ৯ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। পরবর্তীতে ২০১২ সালে ১৫ জুন দলীয় লোকজন সহ এসে পেশি শক্তি ব্যবহার করে স্বপদে বহাল হন। বহাল হয়ে তার বিরুদ্ধে আনীত স্বাক্ষর জালের মামলা উত্তোলনের জন্য আমাকে চাপ প্রয়োগ করে। কিন্তু আমি মামলাটি উত্তোলন না করায় আমাকে অবৈধ ভাবে সাময়িক বরখাস্ত করেন। দীর্ঘ ১৮ মাস আমি সাময়িক বরখাস্ত থাকি এবং আমার বেতন ভাতা বন্ধ করে রাখা হয়। পরবর্তীতে আমার কাছে দেড় লাখ টাকা উৎকোচ নিয়ে আমাকে স্বপদে বহাল করেন।
মাদ্রাসার সহকারী মৌলভী শিক্ষক মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন তিনি পীরগাছা উপজেলার জ্ঞানগঞ্জ ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসায় সহকারী সুপার পদে নির্বাচিত হন। ওই মাদ্রাসায় যোগদানের জন্য সুপার মাওলানা আব্দুস ছাত্তারের কাছে ছাড়পত্র চাইলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে ৭০ হাজার টাকা উৎকোচ নিয়ে তাকে ছাড়পত্র প্রদান করেন।
এছাড়াও সুপারের বিরুদ্ধে কথা বলায় মাদ্রাসার ৩ শিক্ষক ও ১ জন অভিভাবকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানি করার অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষক কর্মচারীদের এমপিও সিটে নাম পদবী,বিষয় সংশোধনে উৎকোচ ছাড়া কাগজ পার না করার অভিযোগ ওঠেছে। সেই সাথে চলতি বছরের মার্চ মাসে মিনিস্ট্রি অডিও সম্পুর্ন করতে শিক্ষক কর্মচারী গণের নিকট ৩২ হাজার ৮৩০ টাকা উত্তোলন করলেও পরবর্তী মাদ্রাসার তহবিল থেকে উক্ত টাকা খরচ দেখিয়ে ৬ মাসের আয় ব্যয়ের হিসাবে জমা দিয়েছেন। এমপিও সিটে সুপারের নিয়োগ যোগদান এনআইডি কার্ডে নামের গড়মিল পরিলক্ষিত হয়েছে। শ্রেণি কক্ষে পাঠদান তদারকি না করে অফিসে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা দাবা খেলে সময় অতিবাহিত করা সহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
মাদ্রাসা সুপার মাওলানা আব্দুস ছাত্তার বলেন আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ভূয়া মিথ্যা ও বানোয়াট। গাছ বিক্রি, জমির মাটি বিক্রি, এনটিআরসিএ কর্তৃক নির্বাচিত শিক্ষকের নিকট থেকে উৎকোচ গ্রহনের বিষয় গুলো সঠিক নয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মহিদুল হক বলেন অভিযোগ পেয়েছি তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে তদন্ত চলমান