বিনোদন

বিয়ে করলেন মানবতার ফেরিওয়ালা ‘ফ্রি মোশন'

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

বুধবার, ১ মে, ২০২৪
বিয়ে করলেন মানবতার ফেরিওয়ালা ‘ফ্রি মোশন'
হেলমেট পরা ছবিটি অধিকাংশ মানুষের কাছে পরিচিত হলেও খুব অল্প সংখ্যক মানুষ তার চেহারা দেখেছেন। মূলত ক্যামেরার সামনে না এসে গোপনে দান করাই তার উদ্দেশ্য। যিনি দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করে অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষ খুঁজে বেড়ান। মানবিক সেবাকেই যিনি জীবনের লক্ষ্য হিসিবে বেছে নিয়েছেন। বলছি, ‘ফ্রি মোশন’ এর ফিরোজ হাসানের কথা। ফেসবুকের জনপ্রিয় এ নাম ফ্রি মোশন পেইজ। বাইকে করে চলার পথে অসহায় মানুষকে সহায়তা করে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন পেইজটির মালিক ফিরোজ হাসান। 

‘ফ্রী-মোশন’ এই নামটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ইউটিউব ব্যবহারকারীদের কাছে খুবই পরিচিত। মানবিক সহায়তা করার জন্যই ‘ফ্রী-মোশন’ নামকে বেছে নিয়েছেন তিনি। ভ্রমণে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে মানুষের বিবেগকে জাগ্রত করাই তার উদ্দেশ্য।

তবে অবাক করার বিষয় হলো প্রথম অবস্থায় এ বিষয়ে ফিরোজ হাসানের তেমন কোনো পরিকল্পনা ছিল না। ভ্রমণের সুবাদে সুবিধাবঞ্চিত মানুষগুলো দেখে নিজ থেকেই তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেন তিনি। প্রথম দিকে ভিডিও করার ভাবনা মাথায় না থাকলেও পরবর্তীতে মানুষের মাঝে মানবিক চেতনাকে ছড়িয়ে দিতে তিনি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি শুরু করেন। যার শুরুটা হয়েছিল ২০২০-এর ফেব্রুয়ারি থেকে।

শুধু তাই নয়, অসহায় মানুষদের সহযোগিতা করতে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতেও পড়তে হয়েছে ‘ফ্রী-মোশন’ এর মালিক এবং প্রতিষ্ঠাতাকে। ফিরোজ হাসানের ভাষায়, কিছু অসাধু ব্যক্তি তার নাম ও পেজের নাম ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ডোনেশন নিচ্ছে। আবার অনেকেই ফেইক আইডি করে মানুষকে প্রতারিত করছে, যেটি খুবই দুঃখজনক। এতোকিছুর পরেও যে মানুষের সেবা করতে পারছেন সে জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।

তিনি আরও বলেন, চলার পথে সামর্থ্য অনুযায়ী সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। আর ভিডিও তৈরির মূল উদ্দেশ্যই মানবিক কাজে মানুষকে উৎসাহিত করা। কেননা তিনি বিশ্বাস করেন, প্রতিটি সামর্থ্যবান মানুষ যদি সুবিধাবঞ্চিত এসব মানুষের পাশে দাঁড়ায় তাহলে অবশ্যই একদিন সমাজ থেকে দারিদ্রতা এবং অসহায়ত্ব দূর হবে ইনশাআল্লাহ।।


দেশজুড়ে বেশ আলোচিত এই ফিরোজ হাসান বিয়ে করেছেন।মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাত সাড়ে নয়টার দিকে নিজের পেইজেই বিয়ের খবর জানান ফিরোজ। নববধূর সাথে একটি ছবি শেয়ার করে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি। সেখানে রিখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ ! জীবনের এক নতুন অধ্যায় শুরু করেছি। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি।

পূর্ব পরিচিত কিংবা প্রেম নয়, পারিবারিকভাবে আয়োজন করে হয়েছে ফিরোজের বিয়ে। তিনি লেখেন, আমার এ বিবাহ পারিবারিক ভাবে এরেঞ্জ করা হয়েছিলো। দোয়া করবেন যেনো আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের দুইজন ও দুই পরিবারকে সারা জীবন আত্মীয়তার সুবন্ধনে আবদ্ধ রাখে।

রাস্তায় চলার পথে হঠাৎ করে অসহায়দের মাঝে খাবার কিংবা নগদ টাকা উপহার দেন ফিরোজ হাসান। তার টাকার অঙ্কও থাকে অনেক বেশি। তার এই সহায়তার কাজে কখনো কারো থেকে টাকা নেন না বলেও দাবি করেন তিনি।


তার জন্ম চাঁদপুরে, এসএসসি এবং এইচএসসি শেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য আসেন রাজধানী ঢাকায়। সেখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে  অনার্স এবং মাস্টার্স শেষ করেন।আর বর্তমান পেশা কনটেন্ট ক্রিয়েশন ও সমাজসেবা করা। সম্প্রতি কিছু সময় আগে তিনি ফেসবুকের মাধ্যমে  বিভিন্ন পোশাক বিক্রি করে থাকেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে মানুষকে বিভিন্ন রকমের সাহায্য প্রদান করে থাকেন।আনুমানিক মাসে তিনি ১ থেকে ১.৫ লক্ষ টাকা অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের দিয়ে দেন। সমাজের অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষগুলো তার কাছ থেকে এমন সাহায্য পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যান। তাদের মুখ থেকে নিঃসৃত একটি হাসির ঝলকানি যেন  ফেসবুক ব্যবহারকারীদের চোখের পানি নিয়ে আসে। 


আমরাও দূরবীন নিউজের পক্ষ থেকে তার বৈবাহিক জীবন আরো বেশি সমৃদ্ধ ও সুখময় হয়ে উঠুক এমনটাই প্রত্যাশা করি।